কি কর্ম করতে হবে, কি কর্ম পরিত্যাগ করতে হবে সে সম্বন্ধে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় নির্দেশ দেওয়া আছে।
যে বিদ্যা বা শিক্ষা পরম জ্ঞান লাভ করতে সাহায্য করে না, তা ভ্রান্ত। যদি পরম জ্ঞান লাভের অভাব হয়, তাহলে বুঝতে হবে যে, সেই কর্ম ও সেই বিদ্যা ও সেই শিক্ষা সম্পূর্ণরূপে নিরর্থক।
বৈদিক শাস্ত্র এবং সত্যদ্রষ্টা ঋষিগণ 42 টি অনুশাসনকে প্রতিটি মানুষের ধর্মরূপে নিরূপণ করেছেন। এই 42 টি বৈদিক অনুশাসন সম্পূর্ণ জীবন পালন করে চলা উচিত পরম মুক্তির জন্যে
1. সত্য
2.অহিংসা
3.অস্তেয়
4.ব্রহ্মচর্য
5. অপরিগ্রহ ( শাস্ত্রীয় অধিকার ছাড়া কারো কাছেই কোনো দান গ্রহণ না করা )
6. শৌচ (দেহশুদ্ধি +ভাবশুদ্ধি + মন -চিন্তাশুদ্ধি )
7. সন্তোষ ( তুষ্ট থাকার অভ্যাস )
8. তপস্যা (আহারশুদ্ধি - সর্বপ্রকার দূষিত অন্ন সম্পূর্ণ রূপে ত্যাগ)
9. সাধ্যায় (রোজ শাস্ত্র অধ্যয়ণ -শাস্ত্রীয় আলোচনা ও নিত্যকর্ম, জপ ইত্যাদি )
10. ঈশ্বরপ্রাণিধান ( ঈশ্বর এ সম্পূর্ণ সমর্পন )
11. দয়া (দুর্বল, অসুস্থ ও নিরপরাধির যে কোনো প্রাণীর উপর )
12. তিতিক্ষা ( কষ্টকর অবস্থায় ধৈর্য্য ধারণ)
13. শম (মনের সংযম)
14. দম (ইন্দ্রিয়ের সংযম)
15. সুযোগ সন্ধানী, বিস্বাসঘাতকতা এবং অকৃতজ্ঞতা রুপি নিচ ভাবের পূর্ণ রূপে পরিত্যাগ
16. আসক্তি-কামনা ত্যাগ ও আত্মচিন্তন
17. উপযুক্ত পাত্রে দান ও কর্মের দক্ষিনাদান
18. আর্জব (সরলতা)
19. যে কোনো অন্যায় বা শাস্ত্রবিরুদ্ধ কর্মে যুক্ত না থাকা- অন্যায় বা শাস্ত্রবিরুদ্ধ প্রশয় না দেওয়া এবং প্রয়োজনে ভয়মুক্ত মনে অন্যায় বা শাস্ত্রবিরুদ্ধ কর্মের প্রতিবাদ করা- প্রয়োজনে দুষ্টের দমন করা ।
20. নিজের কামনা সিদ্ধির জন্যে কখনো কারো অনিষ্ট চিন্তা ও অনিষ্ট না করা
21. ঈক্ষা (বিবেক বিবেচনা দিয়ে চলা)- বিবেক-বিচার-বৈরাগ্য
22. অলসতা, অপযুক্তি , অপবাক্য, কুতর্ক পূর্ণরূপে ত্যাগ করা উচিত
23.লোক কল্যাণ ভাবনা ও দেশভক্তি এবং মৌন (কথা না বলা নয় - শুধু বৃথা আলাপ ত্যাগ করা)
24.কায়োমনোবাক্য গুরুসেবা এবং গুরুর আদেশ মাত্র সবসময় বিনা বিচারে, বিনা যুক্তিতে, বিনা তর্কে আদেশ পালন করা।
25. ঈশ্বরএ পরম ভক্তি , ব্রহ্মজ্ঞান ও পরম মুক্তি এবং অন্য জীবাত্মাকে পরম মুক্তি এর পথে পূর্ণ রূপে সাহাজ্য করা -এটাই জীবনের জীবনের মূল লক্ষ্য স্থির করা।
26. প্রতিমুহূর্তে ও প্রতিটি কাজে নিত্য-অনিত্য বিচার করে চলা
27. বিনয়, নম্রতা ও ভদ্রতা
28. শালিনতা, শিষ্টাচার, শ্রদ্ধা ও প্রীতিমনোভাবাপন্ন
29. নিজের অধিকারের সীমা-মর্যাদা জ্ঞান ও বিশ্বাসের মর্যাদা দান
30. নিষ্ঠা ও নিষ্কাম ভাবে প্রতিটি তপস্যা, ধৰ্ম-কর্ম করা
31. অসৎসঙ্গ ও ধর্মগ্লানিকর এবং নাস্তিক লোকের সঙ্গ সম্পূর্ণ রূপে ত্যাগ
32. সিদ্ধ পুরুষের কাছে শাস্ত্রজ্ঞান ও উপদেশ লাভ
33.পিতামাতার সেবা, সামাজিক ও স্ত্রী-সন্তান ও সাংসারিক দায়িত্ব ও কর্ত্যব্য পূর্ণ নিষ্কাম ভাবে প্রতিপালন
34. ক্ষমা এবং প্রাণীদেরকে অন্ন জল খাদ্য প্রদান করা
35.দেব ও শাস্ত্রে ভক্তি এবং নিজেকে কর্তা নয়, বরং সেবক জ্ঞান করা
36. জীবনে প্রতিক্ষেত্রেই মনঅনুসারের সিদ্ধান্তে নয় - শাস্ত্রানুসারে চলা উচিত
37.যে কোনো লোককে শুধুমাত্র কার্মিক চরিত্র দিয়ে বিচার আর অন্য কিছু দিয়ে বিচার নয়
38. যে কোনো প্রকারের প্রকৃত বা ভন্ড-- ভক্ত, বৈষ্ণব,মুনি-ঋষি বা যে কোনো প্রকারের সাধু-যোগী ইত্যাদির বিচার শুধু মাত্র শাস্ত্র 32 লক্ষন অনুসারে বিচার করে করা উচিত , বাইরের কোনো কিছু (পোশাক,পরিচয়, বাক্য, খাবার-দাবার, চলা-বসার কলা, আশ্রম ইত্যাদি) দিয়ে দেখে ভক্ত, বৈষ্ণব,মুনি-ঋষি বা যে কোনো প্রকারের সাধু-যোগীদের বিচার করা নিষিদ্ধ।
39. গুরু প্রদত্ত রোজ সাধন ভজন করা
40. পূর্ব ভুল কর্মের প্রায়শ্চিত্ত করণ
41. জড়জগতের লোক দেখানো সৌখিনতা বা কামনা পূরণের সৌখিনতা ত্যাগ করা
42. শাস্ত্রীয়ও বিচার করে লোকাচার বা কুসংস্কার মানবিকহীন কর্ম বা ভাবনা ত্যাগ করা .
মন বুদ্ধি অহংকার এই তিনটি মানবদেহের সূক্ষ্ম উপাদান এই তিনটির মধ্যে মন উপাদান হলো মুখ্য উপাদান এটি সকল বন্ধন মুক্তির কারণ।