উপনিষদ হল পবিত্র ধর্মগ্রন্থ
উপনিষদ হল পবিত্র ধর্মগ্রন্থ...একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মগ্রন্থ, যা বেদের অংশ এবং "বেদান্ত" নামেও পরিচিত। এটি মূলত জ্ঞান ও আধ্যাত্মিক তত্ত্বের আলোচনা করে। উপনিষদগুলিতে ব্রহ্ম (পরম সত্য) এবং আত্মার স্বরূপ এবং মুক্তি লাভের উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
উপনিষদ শব্দের অর্থ "গুরুর কাছে বসে শিক্ষা গ্রহণ করা"। এটি জ্ঞান, বিশেষ করে রহস্যময় বা গোপনীয় জ্ঞানকে বোঝায়, যা গুরুর সান্নিধ্যে থেকে লাভ করা যায়। উপনিষদগুলি বৈদিক সাহিত্যের একটি অংশ এবং চারটি বেদের (ঋগ্বেদ, সামবেদ, যজুর্বেদ, এবং অথর্ববেদ) শেষে পাওয়া যায়।
উপনিষদগুলির মূল বিষয় হল ব্রহ্ম ও আত্মার সম্পর্ক, যা মুক্তি বা মোক্ষের পথ দেখায়। এটি ধর্ম, অর্থ, কাম এবং মোক্ষ- এই চারটি পুরুষার্থের মধ্যে মোক্ষ বা আত্ম-উপলব্ধিকে সর্বোচ্চ স্থান দেয়।
উপনিষদগুলির সংখ্যা 108টি হলেও, 13টি উপনিষদ রয়েছে যা সর্বাধিক পরিচিত বা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ - কথা, কেন, ঈসা, মুণ্ডক, প্রস্ন, তৈত্তিরীয়, ছান্দোগ্য, বৃহদারণ্যক, মান্ডুক্য, ঐতরেয়, কৌশিটকি, স্বেতাস্বতার এবং মৈত্রায়ণী।
উপনিষদগুলি হিন্দু দর্শনের ভিত্তি স্থাপন করেছে এবং ভারতীয় সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতার উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।
উপনিষদ কোনো পৃথক শাস্ত্র নয়, বরং বেদেরই একটি অংশ। এগুলো তাত্ত্বিকভাবে বেদের অন্ত বা শেষ পর্যায় হিসেবে বিবেচিত, যা আরণ্যকের শেষ অংশে জ্ঞান ও ব্রহ্মবিদ্যার উপর আলোচনা করে। যদিও সব উপনিষদ আক্ষরিকভাবে বেদের শেষে অবস্থিত নয়, তবুও এদের দার্শনিক ও আধ্যাত্মিক গভীরতার কারণে এগুলো বেদান্ত নামে পরিচিত।
বেদের প্রধান চারটি বিভাগ-
সংহিতা: মন্ত্র ও স্তোত্রের সংকলন।
ব্রাহ্মণ: যজ্ঞ ও আচার-অনুষ্ঠানের ব্যাখ্যা।
আরণ্যক: ধ্যান ও উপাসনার বিষয়ে আলোচনা, বনবাসী ঋষিদের জন্য রচিত।
উপনিষদ: আত্মদর্শন ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের বিষয়ে আলোচনা।
উপনিষদ বেদের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং বেদান্ত নামে পরিচিত। বেদ হলো জ্ঞানের বিশাল ভাণ্ডার, যেখানে ধর্ম, বিজ্ঞান, দর্শন, আচার ,আধ্যাত্মিকতার গভীর চেতনা ও চিরন্তন সত্যের অনুসন্ধান রয়েছে।