জবাকুসুম সঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্। ধ্বান্তারিং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোহস্মি দিবাকরম্।"
যে সূর্য দর্শনে সকল পাপ মুক্ত হয়ে যায় তা কি কখনো আকাশের এই সূর্য হতে পারে?
শাস্ত্রে যে সূর্য তথা আত্মসূর্যের কথা বলা আছে যা দর্শনে সকল পাপ তথা সংস্কার জ্বলে পুড়ে যায়,তা যোগসাধনার অত্যন্ত উচ্চাবস্থায় যোগীর অভ্যন্তরেই প্রকাশিত হয়।
এই আত্মসূর্য দর্শনে সব সংশয়ের নাশ হয় ও সত্যের জ্ঞান হয়।
এই আত্মসূর্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে আগমসার বলেছেন - "সূর্য্যকোটিপ্রতিকাশং চন্দ্রকোটি সুশীতলম্ " - এই আত্মসূর্য কোটি সূর্যের ন্যায় প্রকাশসম্পন্ন অথচ কোটি চন্দ্রের ন্যায় স্নিগ্ধতাদায়ক। এটা কি আকাশের সূর্যকে বোঝায়? বলাই তো হয়েছে যে সেই মহাদ্যুতি আত্মসূর্য কোটি সূর্যের ন্যায় উজ্জ্বল। এই আত্মসূর্যকে লক্ষ্য করে গীতায় আরো বলা আছে - "ত্বমক্ষরং পরমং বেদিতব্যং ত্বমস্য বিশ্বস্য পরং নিধানম্। ত্বমব্যয়ঃ শাশ্বতধর্মগোপ্তা সনাতনস্তং পুরুষো মতো মে।" তুমি পরম জ্ঞানের বিষয়। তোমাতেই এই ব্রহ্মাণ্ড চলার শেষে লীন হয়ে যায়।তুমিই শাশ্বত তথা সনাতন ধর্মের গুপ্ত রহস্য, তুমি সনাতন পুরুষ।
এই প্রদীপ্যমান উৎসই হল আত্মসূর্য। এই আত্মসূর্য সম্বন্ধে কঠোপনিষদ্ বলেছেন - "ন তএ সূর্য্যভাতি ন চন্দ্রতারকে নেমে বিদ্যুতো ভান্তি কুতোহয়মগ্নিঃ। ত্বমেব ভান্তমনুভাতি সর্বং তস্যভাসা সর্বমিদং বিভাতি।"
অর্থাৎ যেখানে সূর্যের কিরণ পৌঁছায় না, চন্দ্রতারকার কিরণও পৌঁছায় না, বিদ্যুতের দ্যুতিও তাহার অপেক্ষা উজ্জ্বল নয়, এই অগ্নির তো কথাই নেই। তিনি নিত্যকাল দেদীপ্যমান আছেন বলেই এই দৃশ্যমান সূর্য চন্দ্র তারকাসহ গোটা জগৎব্রহ্মাণ্ড তাঁর জ্যোতিতেই প্রকাশিত।