কৃষ্ণের হাতে যে বাঁশি পরব্রহ্মনাদ সাধনা
পুরুষোত্তম ভগবান কৃষ্ণের হাতে যে বাঁশি তার ছটি ফুটোই হল দেহের ছটি স্তর বা চক্র। সাধক একে ভেদ করে উপরে উঠে আসেন। বাঁশি হল এই ছয় স্তরের ধ্বনিঝঙ্কার-ব্রহ্মনাদ ।
আর সপ্ত সুর বা বাঁশির বস্তুত সাতটি ফুটো হল আজ্ঞা চক্রের উপর কল্পনাতীত যে সাতটি স্তর সাধনে তারই ইঙ্গিত।
-----ইহাই বেদান্তানুসারে পরব্রহ্মনাদ সাধনা
1. বৈখরী নাদ (জড় শব্দ )
2. মধ্যমা নাদ (অনাহত নাদ )
3.পশান্তি নাদ ( বেদ বেদান্ত মন্ত্র -সৃষ্টি - স্থিতি -প্রলয় গুহ্যতত্ত্ব জ্ঞান সিদ্ধ অবস্থা )
4. পরা নাদ ( ওঙ্কার সিদ্ধ অবস্থা)
5. পরাৎপর নাদ (নাদ সাধনার দ্বারা ব্রহ্মজ্ঞান সিদ্ধ অবস্থা )
এই উপরুক্ত ৫ টি সাধন স্তর নাদ সাধনার স্তর ---এই নাদ সাধনার মাধ্যমেও পরম মুক্তি লাভ হয়।
পুরুষোত্তম ভগবান শ্রী কৃষ্ণের বংশী ধ্বনি -যদি পুরুষোত্তম ভগবান শ্রী কৃষ্ণের কৃপায় যদি কেও নিজের অন্তরে শুনতে পায়-তাহলে সেই সাধক এর আর কোনো সাধনার প্রয়োজন হয় না - সে শ্রী কৃষ্ণর বংশী ধ্বনির প্রভাবে একের পর এক বৈখরী নাদ-মধ্যমা নাদ-পশান্তি নাদ-পরা নাদ-পরাৎপর নাদ -সব সাধনার স্তর অবলীলায় অতিক্রম করে বেদান্তের পরম জ্ঞান-ব্রহ্মজ্ঞান ও পরম মুক্তি লাভ হয়। অন্য কোনো কঠোর যোগ সাধনার প্রয়োজন হয় না -- ইহা ঈশ্বরী কৃপা সাপেক্ষ।
পুরুষোত্তম ভগবান শ্রী কৃষ্ণের ঈশ্বরী কৃপা যার লাভ হয় -তাকে জগতের কোনো মায়া তাকে বাঁধন করতে পারে না তিনি অতি অবলীলায় বেদান্তের পরম জ্ঞান-ব্রহ্মজ্ঞান ও পরম মুক্তি লাভ করেন।
একে বলা হচ্ছে সৎ- আর চিৎ, যা কিনা নিশ্চল দেহে ব্রহ্মজ্ঞান। আর তাতেই ব্রহ্মরন্ধ্রে আনন্দের উন্মেষ ও পরম মুক্তি লাভ ।
***************************************************************
1। কৃষ্ণের বাঁশি কিঃ কৃষ্ণের বাঁশির ৬ টা গর্ত আসলে ৬ টা চক্রের প্রতীক।দেহসৃষ্টির সুর - মুলাধার, স্বাধিষ্ঠান, মনিপুর, অনাহত, বিশুদ্ধ এবং আজ্ঞা চক্র। এই চক্রগুলো দিয়ে পূর্ণানন্দ শ্রীহরির সুমধুর ধ্বনি সাধকের মন প্রাণ আকুল করে তোলে।।
2। ত্রিভঙ্গ মুরারী কৃষ্ণ= ত্রিগুনাতীত পূর্ণব্রহ্ম পরমাত্মা।।
3। রাধাকৃষ্ণ মিলন কীঃ রাধা হচ্ছে কুলকুন্ডলীনি স্বরূপ। সাধকের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে সহস্রার চক্রে কুন্ডলীনি রাধাকে নিয়ে পরমাত্মা শ্রীকৃষ্ণের সাথে মিলন ঘটানো। এভাবে পরমানন্দ লাভ করা।।
4।রাসলীলা কীঃ আদিকাল থেকে আজ পর্যন্ত সিদ্ধিপ্রাপ্ত অসংখ্য সাধকদের জীবাত্মার সাথে কৃষ্ণের মহামিলন;প্রত্যেকেই সহস্রার চক্রে তা উপলব্ধি করে। এভাবে শুধু একার আনন্দ নয়! অগণিত সত্ত্বার আনন্দ লাভ ঘটে। এটাই মহারাস লীলা।।
5।বস্ত্রহরণ কীঃ গোপীনিদের বস্ত্রহরন হচ্ছে সাধকদের আমিত্ব,বাসনা,কামনার বন্ধন খুলে ফেলা।।
6। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দ্বারকা লীলায় বহুসংখ্যক স্ত্রীঃ
শরীরে ৭২০০০ স্নায়ু/ নাড়ির মধ্যে ১৬১০৮ নাড়ি গুরুত্বপুর্ণ।এরাই কৃষ্ণের ১৬১০৮ স্ত্রী। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ একসময়ে সকলের সাথে থাকেন;ফলে প্রতি রন্ধ্রে রন্ধ্রে শিহরণ জাগায়। এতে সাধক পরমানন্দময় হয়ে ওঠে।।